জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম প্রামানিক বলেন,জেলা পরিষদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন পেয়েছেন ১ হাজার ১৬২ ভোট, তার নিকটতম প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ তৈয়বদ্দীন চৌধুরী পেয়েছেন ২২৬ ভোট এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরী পেয়েছেন ৭৮ ভোট।
ভোটের এমন ফলাফলে জেলার তেরোটি উপজেলায় চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। জেলার এত উন্নয়ন সত্ত্বেও জেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেন এই ভরাডুবি! এমন প্রশ্ন এখন নির্জলা বাস্তবতা।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান চৌধুরী মাইকেল বলেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে অন্তর্দন্দ এবং কালো টাকার প্রভাবে পরাজিত হয়েছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী। আওয়ামী লীগ থেকে দুইজন প্রার্থী হওয়ায় দীধা দ্বন্দ্বে ভুগেছে ভোটাররা।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোঃ তৈয়ব উদ্দিন চৌধুরীর বলেন, আওয়ামী লীগ থেকে দুইজন প্রার্থী হওয়ায় ভোটের ফলাফল তাদের বিপক্ষে গেছে। এছাড়া দলের মধ্যে অন্তঃকোন্দল পরাজয়ের আরেকটি উল্লেখযোগ্য কারণ।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের অপর প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইমাম চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জেলা সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক জলিল আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে দলের নেতা কর্মীদের মধ্যে অহংকার বা অহমিকা বাসা বেধেছে। এই অহমিকার ফলে আওয়ামী লীগ জনগণ থেকে আস্তে আস্তে দূরে সরে যাচ্ছে। যা দলটির জন্য অশনি সংকেত। জাতির জনকের রাজনৈতিক দর্শন থেকে আওয়ামী লীগ শিক্ষা না নিলে আগামীতে আরও বড় বিপর্যয় দলটির জন্য অপেক্ষা করছে।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আহমেদ শফী রুবেল বলেন, জাতীয় পার্টির প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন একজন সৎজন ব্যক্তি। জেলার ১৩ টি উপজেলায় জাতীয় পার্টি এখন বেশ শক্তিশালী অবস্থানে। ভোটাররা বর্তমান সরকারের ও স্থানীয় নেতাদের কুকর্মের কারণে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে ।দিনাজপুর জেলা পরিষদের নির্বাচনের ফলাফল সেই ইঙ্গিত প্রদান করছে।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোনটি সুইচ অফ পাওয়া যায়।
জেলার ১০৩ টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে প্রায় ৭৮ শতাংশ ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগ চেয়ারম্যান প্রার্থী জয়ী হয়েছে। ৭৬ শতাংশ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ।এছাড়া পৌরসভা গুলোতেও প্রাধান্য রয়েছে আওয়ামী লীগের। তাহলে জেলা পরিষদের নির্বাচনে ফলাফল কি কারনে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে গেল তা ক্ষতির দেখার প্রয়োজন বলে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
Leave a Reply