আন্তর্জাতিক ডেস্ক ঃ-
কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী! কানাডার রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মার্ক কার্নি, যিনি এখন কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে চলেছেন। জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পর দীর্ঘ দুই মাস ধরে চলা লিবারেল পার্টির নেতৃত্ব প্রতিযোগিতার ইতি টেনে আজ এই ঐতিহাসিক ঘোষণা এলো। মার্ক কার্নির বিজয় কানাডার রাজনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।
কে এই মার্ক কার্নি?
মার্ক কার্নি একজন প্রখ্যাত কানাডিয়ান অর্থনীতিবিদ ও রাজনীতিবিদ। ৫৯ বছর বয়সী এই নেতা রাজনীতিতে আসার আগে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অঙ্গনে নিজের একটি স্বতন্ত্র অবস্থান গড়ে তুলেছিলেন। তিনি ব্যাংক অফ কানাডার ৮ম গভর্নর (২০০৮-২০১৩) এবং ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের ২০তম গভর্নর (২০১৩-২০২০) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও, তিনি ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটির বোর্ড অফ চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেছেন ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। তাঁর অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা কানাডার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন প্রাণসঞ্চার করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
লিডারশিপ প্রতিযোগিতায় কার্নির জয়:
লিবারেল পার্টির নেতৃত্ব প্রতিযোগিতায় মার্ক কার্নি প্রথম থেকেই শক্ত অবস্থান তৈরি করেছিলেন। দলের অভ্যন্তরে তাঁর প্রতি ব্যাপক সমর্থন ছিল, এবং তিনি সবচেয়ে বেশি ফান্ডিং সংগ্রহ করতে সক্ষম হন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীরা নানাভাবে ক্যাম্পেইন চালালেও শেষ পর্যন্ত কার্নির সামনে টিকতে পারেননি। আজকের ভোটে তাঁর জয় নিশ্চিত হওয়ায় তিনি লিবারেল পার্টির নতুন নেতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কার্নির চ্যালেঞ্জ:
মার্ক কার্নি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হবেন, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো কানাডার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক নীতি এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা কানাডার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কার্নি ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, তিনি শুল্ক যুদ্ধ মোকাবিলায় শক্ত অবস্থান নেবেন এবং কানাডার অর্থনীতিকে সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।
এছাড়াও, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে কার্নির অবস্থান স্পষ্ট। তিনি কার্বন ট্যাক্স বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছেন, যা তাঁর নীতির একটি বড় অংশ। তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছু সমালোচনাও রয়েছে।
কানাডার রাজনীতিতে নতুন মোড়:
ট্রুডোর পদত্যাগের পর কানাডার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। লিবারেল পার্টির জনপ্রিয়তা কিছুটা কমলেও মার্ক কার্নির নেতৃত্বে দলটি আবারও জোরালো অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে, কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েরে পোয়েলিয়েভ্রে এখনও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন। তবে কার্নির শক্তিশালী নেতৃত্ব এবং অর্থনৈতিক অভিজ্ঞতা তাঁকে এগিয়ে রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কানাডার জনগণের প্রত্যাশা:
কানাডার জনগণ নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির কাছ থেকে অনেক কিছু প্রত্যাশা করছেন। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি, এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা—এই ইস্যুগুলোতে কার্নির নীতিই নির্ধারণ করবে তাঁর সরকারের সাফল্য।
শেষ কথা:
মার্ক কার্নির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়া কানাডার জন্য একটি নতুন সূচনা। তাঁর অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং দূরদর্শিতা কানাডাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। এখন দেখার বিষয়, তিনি কীভাবে দেশের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করেন এবং কানাডার জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করেন।
কানাডার নতুন এই অধ্যায় সবার জন্য শুভ হোক!
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃআব্দুল মুনিব মামুন, মোবাইল: 01715496849 অফিস: 406.Rangmohol Tower (4Floor) Bondor Bazar,Sylhet-3100। Email : banglasangbad1@gmail.com