জেলার বিরল উপজেলার পাঁচ নং বিরল ইউনিয়নের পূর্ব মধ্যবর্তী গ্রামের কৃষক মোকসেদ আলী জানান, ধানের শীষ গুলো দেখে মন ভরে যাচ্ছে। এবার ৫ বিঘা জমিতে বারি ৯০ এবং পাঁচ বিঘা জমিতে চিকন যাতে ৩৪ ধানের আবাদ করেছি। প্রতি বিঘায় ফলন ৩০ থেকে ৪০ মন আশা করছি।বর্তমানে বাজারে ধানের দর ভালো রয়েছে।
বিরল উপজেলার মাধববাটি গ্রামের ধান ব্যবসায়ী তসলিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে বাজারে শুধু আগাম জাতের ধান উঠেছে। ৭৫ কেজি প্রতি বস্তা ধান বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ টাকা থেকে ২৬০০ টাকা পর্যন্ত। কৃষকরা ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে।
বিরল উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষক কর্মকর্তা মোঃ হানিফ বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত মাঠে-ঘাটে গিয়ে কৃষকদিদের উন্নত জাতের ধান উৎপাদনে সহযোগিতা ও প্রণোদনা প্রদান করছি। সেই সাথে কৃষকদের প্রতিটি সমস্যা সমাধানে আমরা মাঠ পর্যায়ে লেগে আছি।
বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, উপজেলায় এবার ২৯ হাজার ১৭ হেক্টর জমিতে বারি ৩৪, বারি ৯০, বারি ৭৫, বারি ৮৭ জাতের ধানের আবাদ করেছে কৃষকরা। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। বর্তমানে আগাম জাতির যে ধানগুলি বাজারে এসেছে তার দামও চলছে কৃষকের পছন্দ সই।
কেন্দ্রীয় চালকল মালিক সমিতির নেতা শহিদুর রহমান পাটোয়ারী মোহন যান বলেন, এবারে মৌসুমীর শুরুতেই কৃষকরা ধানের ভালো দাম পাচ্ছে। সরবরাহ বাড়লে ধানের দাম কিছুটা কমবে। তবে কৃষকরা এবার ধানের ন্যায্য মূল্য পাবে এটা নিশ্চিত কারণ গোটা বিশ্ব খাদ্য সংকটে ভুগছে।
দিনাজপুর জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নুরুজ্জামান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যেন দেশে কোন পতিত জমি না থাকে। সে লক্ষ্যে দিনাজপুর জেলা যেহেতু খাদ্যশস্য উৎপাদনকারী জেলা গুলোর মধ্যে অন্যতম সেহেতু এই জেলার গুরুত্ব অনেক বেশি। সাথে এই জেলায় কৃষি সম্প্রসারণের অধিদপ্তর আরো বেশি উপযোগী ভূমিকা রাখতে পারে সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা এক ফসলে জমিকে দুই ফসলিতে। দুই ফসলী জমিকে তিন ফসলিতে এবং তিন ফসলী জমিগুলোকে চার ফসলী জমিতে পরিণত করার চেষ্টা করছি। বর্তমান সরকারের কৃষি যান্ত্রিকীকরণ কৃষি ক্ষেত্রে অনন্য সাধারণ ভূমিকা রাখছে ।আমরা কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণের গুরুত্ব দিচ্ছি।
জেলার সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি জলিল আহমেদ বলেন, বর্তমানে বাজারে প্রতি বস্তা ধান বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ টাকা থেকে ২৬০০ টাকা পর্যন্ত। এতে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। তবে বাজারে ধানের সরবরাও বাড়লে দাম কমবে। এবং ধানের দাম কমে গেলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভরা মৌসুমী যেন ধানের দাম না কমে সেজন্য সরকারি সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।
জেলায় এই মৌসুমে ২ লক্ষ ৬০ হাজার জমিতে বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদ হয়েছে। এখান থেকে সাড়ে ১৫ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছে দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
Leave a Reply