কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় শুরু হয়েছে খেজুর রস সংগ্রহ।গাছিদের মাঝে ব্যপক উৎসাহ, রস বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা।
মঙ্গলবার(২৭ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়,উপজেলার হোসেন্দী বাজার থেকে নারান্দী হয়ে আজলদী বাজারে যাওয়ার সড়কের দু -পাশে দাঁড়িয়ে সারি সারি খেজুরগাছ।যা থেকে রস সংগ্রহ চলছে,আবার অনেক ক্রেতারা ভির জমিয়েছেন সদ্য পারা টাটকা রস সংগ্রহ করতে।
জানতে পারি, উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে গরুর দুধ বিক্রি হয়। আর ছাঁকুনি দিয়ে ছেকে প্রতি কেজি খেজুর রস ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, কেউ কিনে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে পরিবারের জন্য। কেউবা গাছের গোড়ায় দাঁড়িয়ে এক চুমুকেই রস খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছে।
ওই এলাকার বাসিন্দা শাহ নেওয়াজ বলেন, ১০/১৫ বছর ধরে খেজুরের রস খুব একটা দেখা যায় না। অথচ একটা সময় বাড়ি বাড়ি গিয়ে গাছিরা রস বিক্রি করতেন। এ বছর কয়েক জন সড়কের পাশের খেজুরগাছ থেকে রস নামানো শুরু করেছে। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসেন খেজুরের রস পান করতে।
গাছের মালিকেরা বলেন, অগ্রহায়ণ, পৌষ ও মাঘের শীতে খেজুর গাছগুলো থেকে প্রচুর রস সংগ্রহ করা যাবে।
আরও জানা যায়, শীত মৌসুমে সকালে খেজুরের রস আহরণ করে তার কিছু অংশ গাছতলায় বিক্রি করে আর কিছু অংশ আশপাশের বাজারে বিক্রি করে থাকেন অবশিষ্ট রস আর বিকেলের রস থেকে গুড় বা রাব তৈরি করে তা বাজারে বিক্রি করে।
একটি খেজুর গাছ থেকে গড়ে দিনে ১ কেজি আবার কোন কোন গাছ থেকে দুই থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত রস আহরণ করা সম্ভব হয়।
শীতের দিনে বিভিন্ন ধরণের পিঠা-পুলি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে খেজুরের গুড়। গ্রাম-বাংলার চিরায়িত রুপ খেজুরের রস আহরণ। হাড় কাপাঁনো শীতের সকালে খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি নানা ধরণের পিঠা-পুলি খাওয়া চিরায়িত বাঙ্গালী জাতির এ যেন ঐতিহ্যগত স্বভাব।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরে ই আলম বলেন, সময়ের ব্যবধানে এ অঞ্চলেই খেজুর গাছ অনেকটাই কমে গেছে। গাছিদের খেজুর গাছ কাঁটার কাজটি শিল্প আর দক্ষতায় ভরা। ডাল কেঁটে গাছের শুভ্র বুক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল, রয়েছে ধৈর্য ও অপেক্ষার পালা। এ জন্য শীত মৌসুমে আসার সাথে সাথে দক্ষ গাছিদের কদর বাড়ে। আশা করছি, আবহাওয়া ভাল থাকলে চাষিরা খেজুর গুড় থেকে অধিক লাভবান হবেন।
Leave a Reply