
মোঃ ইসমাইল হোসেন শ্যামনগর সাতক্ষীরা প্রতিনিধি।
বেড়িবাঁধ সংস্কারের নামে সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ। উপকূলীয় বাঁধ রক্ষার জন্য সামাজিক ভাবে বনায়ন তৈরি করা হলেও সেই বনায়ন ধ্বংস করেই বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ হচ্ছে। প্রতিদিন হাজার হাজার গাছ নির্বিচারে ধংস করা হচ্ছে অথচ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা চোখে কালো চশমা দিয়ে বসে আছেন। এভাবে জড় পদার্থের মত বসে থাকার কারণ হিসেবে দেখা গেছে প্রতিটা কাজের সাথে কর্মকর্তা অথবা কর্মচারীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট। প্রত্যেকেই ঠিকাদার বা সাব ঠিকাদারের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে থাকে। যে কারণে তাদের শত অপকর্মেও বাধা দিতে পারেন না ঐ সমস্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। উপজেলার কোথাও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন প্রকার জোরালো ভূমিকা নেই। অথচ চোখের সামনে দখল হয়ে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাজার হাজার বিঘা সম্পত্তি, নষ্ট হচ্ছে শত কোটি টাকার সম্পদ। পানি উন্নয়ন বোর্ড বিরোধী কোন কর্মকান্ড চোখে পড়লে সেটি যদি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয় তাহলে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না , কেনোই বা নেওয়া হয় না তাহলে কি পানি উন্নয়ন বোর্ড সরকারি বেতন ভাতা খাননা নাকি ঠিকাদারের পোষা গোলাম এটা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেল জনমনে। তাদের কাছে একাধিক বার জানানোর পরও কাজ হচ্ছে না বরং তার বিপরীতটাই হয়ে থাকে।
সম্প্রতি সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জের পূর্বকালিনগরে ১৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৪৪৮ মিটার বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। কাজটির মূল ঠিকাদার যশোরের মুহিত উদ্দিন হলেও সাব ঠিকাদার হিসাবে কাজ করছেন আশাশুনি উপজেলা মইনুল ইসলাম। তবে বর্তমানে সাব ঠিকাদারও সেখানে কাজ করছেন না। গাবুরা ইউনিয়নের আবু সাইদ নামে এক ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে চলছে কাজটি। ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী ঝুড়ি কোদালে কাজ করার কথা থাকলেও অধিক লাভের আশায় স্কেভেটর ব্যবহার করে গাছ নিধন করছেন ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে হাজার হাজার গাছ ধ্বংস করে স্কেভেটরের মাধ্যমে রাস্তা সংস্কারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
সরজমিনে দেখা যায়, স্কেভেটর মেশিন চালানোর ফলে নির্বিচারে সামাজিক বনায়নের হাজার হাজার গাছ কেটে সারাড় করা হচ্ছে। বেড়িবাঁধ সংস্কারের নামে হাজার হাজার গাছ নির্বিচারে ধংস করা হচ্ছে এবিষয়ে উপজেলা সামাজিক বন কর্মকর্তা সহিদুর রহমান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেন নি। সামাজিক বন বিভাগের হাজার হাজার গাছ কর্তন হচ্ছে অথচ উনি বিষয়টা নাকি জানেন না। এমনকি কোন এলাকায় এমন কাজ হচ্ছে সেটা সম্পর্কে কোন ধারনাই নেই। সাংবাদিকদের মাধ্যমেই তিনি সর্বপ্রথম জানলেন। সর্বশেষ সামাজিক বন কর্মকর্তা একই সুরে বললেন আমি লিখে নিচ্ছি ব্যবস্থা করা হবে।
সচেতন মহলের দাবি বেড়িবাঁধ নির্মাণে সরকারি অর্থ সঠিকভাবে বন্টন হচ্ছে না। প্রভাবশালী ঠিকাদাররা প্রথমে কাজটি লিখে নিচ্ছেন। পরবর্তীতে নির্দিষ্ট লাভের বিনিময় সাব ঠিকাদারের কাছে বুঝিয়ে দিচ্ছেন। সাব ঠিকাদার স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ম্যানেজ করে কোনরকম জোড়া তালি দিয়ে কাজটি সম্পন্ন করছেন।
Leave a Reply