গুনগুনিয়ে গান গায় মৌমাছি,
হলুদ কুঞ্জে মন পেতে আছি,
শিহরণ জাগে মোর মনে।
সর্ষে রুপসি হলদে কণ্যার নরম শরিলে যখন মৌমাছি বসে মধুর টানে।।
মাহফুজ রাজা’র এ কাব্যিক আওড়ানো বুলি এসময় যেন জীবন্ত রুপ পেয়েছে। প্রকৃতিতে চলছে এর বাস্তবতা। দিগন্ত যেন সরষে ফুলের হলুদিয়া পরতে সাজানো।
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের চর-অধ্যুষিত এলাকায় ফসলের মাঠে এখন সরিষা ফুলের স্বর্গরাজ্য। সেই রাজ্যে মৌমাছির মিছিলে মুখর হলুদ দিগন্ত।প্রকৃতি প্রেমিদের সেলফি তুলার হিড়িক। যতদূর চোখ যায় কেবল হলুদ আর হলুদ।হলুদের গালিচা সুনিপুণ প্রকৃতির শোভা বাড়িয়েছে শতগুণ।
শনিবার(২৯ ডিসেম্বর) সরেজমিনে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বিস্তৃত মাঠ ঘুরে দেখা যায় চারদিকে হলুদ গালিচা বিছিয়ে যেন অপরূপ সাজে সেজেছে পল্লীপ্রকৃতি।
ধীরে ধীরে বেলা গড়িয়ে নেমে আসে বিকেল। সেই বিকেলের পড়ন্ত মিষ্টি রোদ্দুরে কিম্বা কন্যা সুন্দর আলোয় হলুদ ফুলগুলো রূপ নেয় অনন্য এক মাধুর্যে। মিষ্টি বাতাসে দোল খেতে থাকে ফুলের ডগাগুলো। দিগন্ত বিস্তৃত সর্ষের হলুদ ফুল-ফলে সেজে ওঠা সৌন্দর্যে মুগ্ধ কৃষকের চোখে-মুখে ফোটে নির্মল আনন্দের ঝিলিক।অন্যদিকে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত আবারিত হলুদের মাঠ সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে এখন মৌমাছির গুঞ্জন সরব হয়েছে প্রকৃতি।পড়ন্ত বিকালে সর্ষে ফুলের সাথে নিজেকে ক্যামেরা বন্ধি হতে দেখা যায় সাজোয়া মানুষজনকে কানে গুঁজে হলুদ ফুল।কিছু মাঠ দেখলে মনে হয় পর্যটন সাজে সজ্জিত, দূর থেকেও আসছে পর্যটক সরষের ফুলে অঙ্গ জড়াতে,বন্ধি হতে হলুদিয়া ফ্রেমে।এ যেন হলুদের প্রস্ফুটিত ফুলের সাথে প্রেম প্রেম খেলা।
উপজেলার সাহেবের চর গ্রামের কৃষক সাদেক হোসেন ও পলাশ মিয়া জানান,প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ধানসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদন করে ন্যায্যমূল্য পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে কৃষকরা অল্প সময় ও কম খরচে উৎপাদিত বেশি দামে বিক্রিযোগ্য ফসল সরিষা ব্যাপক হারে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ফসলের বাম্পার ফলনের হাতছানিতে হাসি ফুটেছে চাষিদের।
হলুদ গালিচায় মোড়ানো দিগন্তজুড়ে বিস্তৃত মাঠে এখন সরিষা ফুলের সমারোহ।শুধু হলুদ আর হলুদের আভায় যেনো হোসেনপুরে একটি পৌরসভা ও ছয়টি ইউনিয়নের প্রতিটি মাঠ সেজেছে আপন মহিমায়। সবুজ প্রকৃতি যেনো হলুদের দুয়ার উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
উপজেলার মাঠে মাঠে এই হলদে সাজের সমাহার ইঙ্গিত করছে কৃষকদের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা। কৃষকের চোখে এখন লাভের হাতছানি।
উপজেলার চরকাটিহারী, চর হাজীবাড়ী পুর,চর জামাইল,চর বিশ্বনাথপুর,সাহেবেরচরসহ বিভিন্ন এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠে এখন সরিষার হলুদ রঙের ফুলের সমারোহ। যেন হলুদ রঙের সুষমা শোভা পাচ্ছে দিকে দিকে।
চলতি রবিশস্য মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সরিষা খেতে রোগবালাই কম হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ।শুধু হলুদ আর হলুদের আভায় যেনো হোসেনপুরের মাঠ সেজেছে আপন মহিমায়।
Leave a Reply