
মাহফুজ হাসান,কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
“ওহে পদ্ম ফুল!
ভোরের হাওয়ায় শীতল স্পর্শে দুলছো দোদুল- দুল।”
কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে দিগন্তজুড়ে শোভা পাচ্ছে পদ্মফুলের গালিচা। পদ্মবিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে জেলার পাশাপাশি প্রতিবেশী জেলা থেকেও ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসছেন।
অনন্য সৌন্দর্য রুপ লাবন্যের কারনে পদ্মফুল কে বলা হয় জলজ ফুলের রাণী।বর্ষা মৌসুমে প্রায় দশ একর জায়গার এই বিলে পদ্মফুল ফুটে। আর শুকনো মৌসুমে এ বিলে ধান চাষ করা হয়।
স্নিগ্ধতার রঙ আর আকাশে মেঘের ভেলা এই দুইয়ে মিলে যেন একাকার প্রকৃতি।
আকাশে সূর্য উঁকি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিলে আসেন পর্যটকরা। পদ্মফুল আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ভিড় করছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। নৌকায় ঘুরে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পদ্মফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করেন তারা।
বিলে যতদূর দৃষ্টি যাবে দেখা মিলবে সবুজের মধ্যে মাথা উঁচু করে থাকা গোপালী পদ্ম। সেই সঙ্গে পদ্ম পাতার ওপর ও জলরাশিতে দেখা মিলবে সোনালি ব্যাঙ, ঘাস ফড়িং ও মাছের। দেখা মিলবে মৌমাছি দলের মধু সংগ্রহের জন্য এক ফুল থেকে অন্য ফুলে উড়ে বেড়ানো। কিছুটা সময়ের জন্য এ যেন অন্য জগতে হারিয়ে যাওয়া। আর অনিন্দ্য সৌন্দর্যের জলজ ফুলের রানী পদ্ম মনের সব কষ্ট ভুলিয়ে দেবে।
অনেকেই আবার এমন অপরূপ সৌন্দর্য ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি করে রাখছেন। স্থানীয়রাও ভ্রমণপিপাসুদের সার্বিক সহযোগিতা করছেন।
জানা গেছে, উপজেলা সদরের অদূরে ছায়া সুনিবিড় ছবির মতো গ্রাম দড়ি জাহাঙ্গীরপুর। এ গ্রাম সংলগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে কাইনহা বিলের অবস্থান। বর্ষা ও শরৎকালে এ বিলের বুকজুড়ে দেখা দেয় পদ্ম ফুলের সমারোহ। এ কারণে দশগ্রামের মানুষের কাছে বিলটি পদ্মবিল হিসেবেই পরিচিত। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন ফুলের বিছানা পেতে রেখেছে কেউ।
ত্রিশাল থেকে পরিবার নিয়ে পদ্মবিলে ঘুরতে আসা গার্মেন্টস ব্যবসায়ী আমির হোসেন বলেন, অনেক দিন পর পরিবার নিয়ে পদ্মবিলে এসেছি। এখানে পদ্মফুলের সৌন্দর্য দেখে মনটা ভরে গেছে।
ডিঙ্গি নৌকার মাঝি রমজান মিয়া বলেন, পদ্মফুল দেখতে প্রতি দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শত শত মানুষ আসে। দিনে চার-পাঁচবার করে একেকজন মাঝি নৌকায় লোকজন নিয়ে বিলে যায়। নৌকায় বিল দেখিয়ে বেশ ভালো আয় হচ্ছে। নৌকা দিয়ে দিনভর পর্যটক নিয়ে বেড়ায় আর রাতে নৌকা দিয়ে মাছ ধরি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার জানালেন, শুকনো মৌসুমে ধান চাষ আর বর্ষায় পদ্ম ফুলের সমাহারে বিলটি একটি সম্পদে পরিণত হয়েছে। পদ্ম ফুলের টানে পর্যটক আসায় বাড়তি উপার্জনও করছেন স্থানীয়রা।
Leave a Reply